'ক্রোধ' এর আরবি প্রতিশব্দ 'গাদাব' (غَضَبٌ) যার অর্থ রাগ। স্বীয় স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হওয়া বা কারো দ্বারা তিরস্কৃত হওয়ার কারণে প্রতিশোধ গ্রহণের ইচ্ছায় মানুষের মনের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, তাকে ক্রোধ বলে। অহংকার, তিরস্কার, ঝগড়া প্রভৃতি কারণে ক্রোধের সৃষ্টি হয়।
ক্রোধ ও রাগের ফলে মানুষ অনেক নির্দয় ও অত্যাচারমূলক কর্মকাণ্ড করে ফেলে। পরবর্তিতে এর কারণে লজ্জিত ও অবজ্ঞার পাত্রে পরিণত হয়। তাই মুসলমানদের উচিত ক্রোধের সময় নিজেকে সংবরণ করা। এ বিষয়ে মহানবি (স.) বলেন,
لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرْعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ
অর্থ: 'শক্তিশালী সেই ব্যক্তি নয়, যে খুব কুস্তি লড়তে পারে। বরং প্রকৃত শক্তিশালী হচ্ছে সেই ব্যক্তি, যে ক্রোধের সময় নিজেকে সংযত রাখতে পারে।' (বুখারি ও মুসলিম)
অপকারিতা
ক্রোধ একটি নিন্দনীয় বিষয়। এটি মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করে। আর হিংসা মানুষের সৎকর্মসমূহ শেষ করে দেয়। ক্রোধের সময় মানুষের হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। সে নিজেকে সংযত রাখতে পারে না। ক্রোধ মানুষের ইমানকে ধ্বংস করে দেয়। এ সম্পর্কে মহানবি (স.) বলেন, 'সিরকা মধুকে যেভাবে বিনাশ করে, ক্রোধও ইমানকে তদ্রূপ নষ্ট করে।' (বায়হাকি)
ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আল্লাহর গযব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। প্রিয় নবির সাহাবি হযরত ইবনু উমার (রা.) রাসুলুল্লাহ (স.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, এমন কোনো কাজ আছে যা আল্লাহ তায়ালার গযব থেকে রক্ষা করবে? রাসুল (স.) বলেন, 'তুমি রাগ করবে না।' (তাবারানি)
ক্রোধ সংবরণ করা একটি পুণ্যের কাজ। রাসুল (স.)-এর এক সাহাবি একবার রাসুল (স.)-কে বললেন, 'হে আল্লাহর রাসুল, আপনি আমাকে একটি ভালো কাজের নির্দেশ দিন।' প্রিয় নবি (স.) তাকে বললেন 'তুমি রাগ করবে না।' (বুখারি)
মহানবি (স.) বলেছেন, 'ক্রোধ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি ঠাণ্ডা করে। যদি কারো রাগ হয়, তবে তার উচিত ওযু করে নেওয়া।' (বুখারি ও মুসলিম)
দলগত কাজ: শিক্ষার্থীরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে ক্রোধ পরিহারের উপায়গুলো বের করবে এবং পোস্টারে লিখে শ্রেণিকক্ষে উপস্থাপন করবে। |
বাড়ির কাজ: 'ক্রোধ একটি নিন্দনীয় বিষয়'- ব্যাখ্যা কর। |
Read more